দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টও অভিশংসিত

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১১ এএম | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১১ এএম

 দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে অভিশংসনের পক্ষে রায় দেয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু’কেও অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট। রাষ্ট্রপ্রধানকে অভিশংসনে ১৫১ ভোটের প্রয়োজন ছিল। হানকে সরানোর পক্ষে রায় দিয়েছেন ১৯২ জন আইনপ্রণেতা।

সামরিক আইন জারির ব্যর্থ চেষ্টার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইউন পার্লামেন্টে অভিশংসিত হওয়ার পর গেল ৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী হান ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতিতে দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল হানের; কিন্তু বিরোধী এমপিরা তাতে রাজি নন। তাদের ভাষ্য, ইউনের অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পন্নের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট। গতকাল ভোটাভুটি নিয়ে পার্লামেন্টে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার উ ওন-শিক যখন ঘোষণা দিলেন যে অভিশংসন বিল পাসের জন্য ১৫১ ভোট পক্ষে পড়লেই চলবে, তখন ইউন ও হানের ক্ষমতাসীন পিপলস পাওয়ার পার্টির (পি) আইনপ্রণেতারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এর মানে হল ইউনকে অভিশংসনের জন্য যেখানে ২০০ ভোটের প্রয়োজন হয়েছিল, এক্ষেত্রে তার দরকার হবে না। অর্থাৎ, ক্ষমতাসীন আইনপ্রণেতাদের ভোট ছাড়াই হানকে অভিশংসিত করা যাবে।

এদিন, ক্ষমতাসীন দলের এমপিরা ভোট কক্ষের মাঝখানে জড়ো হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে স্লোগান দিতে থাকেন এবং স্পিকারের পদত্যাগের দাবি করেন। তাদের বেশিরভাগই ভোট বর্জন করেন। পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে অভিশংসনের প্রজ্ঞাপন দিলেই হানকে তার দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করা হবে। তবে ইউনের মত হানের অভিশংসনের ক্ষেত্রেও সাংবিধানিক আদালতের অনুমোদন নিতে হবে। পার্লামেন্টে অভিশংসনের পক্ষে যে রায় এসেছে, তা বহাল রাখা উচিত কি না, সে প্রশ্নে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য সাংবিধানিক আদালত ১৮০ দিন সময় পাবে।

অভিশংসনের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হান বলেন, ‘আমি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সিদ্ধান্তকে সম্মান করি।’ এখন সাংবিধানিক আদালতের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করার কথাও বলেন তিনি। ইউনের অভিশংসন মামলা বিচারের জন্য পার্লামেন্টের বেছে নেয়া তিন বিচারকের নিয়োগ হান আটকে দেয়ার পর বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনেন বিরোধীরা। কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত সাধারণত ৯ সদস্যের বেঞ্চ নিয়ে গঠিত হয়। পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত বহাল রাখতে হলে অন্তত ছয়জন বিচারককে ইইউনের অভিশংসনের পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। বেঞ্চে বর্তমানে ছয়জন বিচারক রয়েছেন, তার মানে তাদের যে কোনো একজন অভিশংসনের বিরোধিতা করে ইউনকে অপসারণ হাত থেকে বাঁচাতে পারেন।

বিরোধীরা আশা করেছিল, নতুন তিন বিচারক নিয়োগ হলে ইউনের অভিশংসনের পথ প্রশস্ত হবে। গতকাল অভিশংসন বিল পাসের পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে হানের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী চোই সাং-মক। হানের অপসারণের সিদ্ধান্ত দেশটির চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও অনিশ্চয়তাকে আরও তীব্র করবে। ১৬ বছর আগে বিশ্বজুড়ে যে আর্থিক সংকট দেখা দেয়, সেই সময়ের পর থেকে শুক্রবার কোরিয়ার মুদ্রা ওনের মান ডলারের বিপরীত সর্বনিম্ন স্তরে নেমেছে। এ পরিস্থিতির জন্য দেশটির রাজনৈতিক দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছে। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

এশিয়ান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে ইরানি ভারোত্তোলকের স্বর্ণ জয়
যুদ্ধের দামামা, তালেবানের পাল্টা হামলায় ১৯ পাকিস্তানি সেনা নিহত
ট্রাম্প-মাস্কের বন্ধুত্বে চিড়! অভিবাসন নীতি নিয়ে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে
ভারতে বড়দিন উদযাপন করায় ২ নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে যৌন নিপীড়ন-মারধর
জুতার জন্য চাকরি হারিয়ে পেলেন ৪৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ!
আরও

আরও পড়ুন

৩১ ডিসেম্বর কী হতে যাচ্ছে? যা জানা গেল

৩১ ডিসেম্বর কী হতে যাচ্ছে? যা জানা গেল

পটুয়াখালীতে আলতাফ হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে  বিশাল গণমিছিল

পটুয়াখালীতে আলতাফ হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে  বিশাল গণমিছিল

টোল প্লাজার দুর্ঘটনা সন্তান বেঁচে নেই, এখনও জানেন না বাবা-মা

টোল প্লাজার দুর্ঘটনা সন্তান বেঁচে নেই, এখনও জানেন না বাবা-মা

নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত

নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত

শিল্পাচার্য জয়নাল আবদিনের ১১০ তম জন্মবার্ষিকী পালন

শিল্পাচার্য জয়নাল আবদিনের ১১০ তম জন্মবার্ষিকী পালন

এশিয়ান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে ইরানি ভারোত্তোলকের স্বর্ণ জয়

এশিয়ান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে ইরানি ভারোত্তোলকের স্বর্ণ জয়

রহমত ২৩১*, শাহিদি ১৪১*, বুলাওয়েতে ঐতিহাসিক দিন

রহমত ২৩১*, শাহিদি ১৪১*, বুলাওয়েতে ঐতিহাসিক দিন

এইচ এম কামরুজ্জামান খান সারা জীবন আধিপত্যবিরোধী রাজনীতি করে গেছেন

এইচ এম কামরুজ্জামান খান সারা জীবন আধিপত্যবিরোধী রাজনীতি করে গেছেন

বন্দরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া ধ্বংসের পায়তারা করছে আ.লীগের দোসররা

বন্দরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া ধ্বংসের পায়তারা করছে আ.লীগের দোসররা

ময়মনসিংহে আলোচিত ‘বালু খেকো’ আওয়ামী লীগ নেতা জামাল গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহে আলোচিত ‘বালু খেকো’ আওয়ামী লীগ নেতা জামাল গ্রেপ্তার

বিজয় দিবস রাগবিতে চ্যাম্পিয়ন সেনাবাহিনী

বিজয় দিবস রাগবিতে চ্যাম্পিয়ন সেনাবাহিনী

কোরআন শিক্ষার মাধ্যমেই সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব- মামুনুল হক

কোরআন শিক্ষার মাধ্যমেই সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব- মামুনুল হক

বাংলাদেশে বেড়েই চলেছে খাদ্যপণ্যের দাম : বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশে বেড়েই চলেছে খাদ্যপণ্যের দাম : বিশ্বব্যাংক

সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত

সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত

একইসময়ে রহস্যময় স্ট্যাটাস দিয়ে কী বুঝাতে চাইলেন আসিফ-হাসনাত!

একইসময়ে রহস্যময় স্ট্যাটাস দিয়ে কী বুঝাতে চাইলেন আসিফ-হাসনাত!

দূতাবাসগুলোতে যাদের আচরণ খারাপ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিন: আসিফ নজরুল

দূতাবাসগুলোতে যাদের আচরণ খারাপ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিন: আসিফ নজরুল

দেশের পরিস্থিতি ঠিক না হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশের পরিস্থিতি ঠিক না হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কিশোরগঞ্জে দুই নারীর রহস্যজনক মৃত্যু, গ্রেফতার-১

কিশোরগঞ্জে দুই নারীর রহস্যজনক মৃত্যু, গ্রেফতার-১

বড় চমক অ্যাপলের, জ্বর ও হার্ট অ্যাটাকের আগেই সতর্ক করবে ইয়ারবাডস

বড় চমক অ্যাপলের, জ্বর ও হার্ট অ্যাটাকের আগেই সতর্ক করবে ইয়ারবাডস

ফিরে দেখা ২০২৪: ফুটবলে ঘটনাবহুল বছর

ফিরে দেখা ২০২৪: ফুটবলে ঘটনাবহুল বছর